খবরবাড়ি ডেস্কঃ বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু বলেছেন, তিস্তা মরুভূমিতে পরিণত হয়েছে। তিস্তার এই মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে হলে নির্বাচিত সরকারের দরকার। তা না হলে তিস্তার ন্যায্য হিস্যা আদায় করা সম্ভাব হবে না। তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন হলে এই তিস্তা পাড়ের মানুষ আবার তাদের সবকিছু ফিরে পাবে। তাই নির্বাচিত সরকার গঠনে সকলকে ঐক্যমতের ভিত্তিতে কাজ করতে হবে।
তিস্তা মহা পরিকল্পনা বাস্তবায়ন নিয়ে ‘জাগো বাহে, তিস্তা বাঁচাও’ এই শ্লোগানে গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জে দুইদিন ব্যাপী অবস্থান কর্মসূচির শুরু হয় সোমবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) উপজেলার হরিপুর-চিলমারি তিস্তা পিসি গার্ডার সেতুর হরিপুর পয়েন্টে। উত্তরের পাঁচটি জেলার ১১টি পয়েন্টে তিস্তাতীরে একযোগে ৪৮ ঘন্টা অবস্থান কর্মসূচি চলবে।
এসময় বরকত উল্লাহ বুলু আরো বলেন, নোবেল জয়ী অধ্যাপক ড. ইউনুস বিশ্বের সকল মানুষের নিকট একজন সম্মানী ব্যক্তি। তাঁর দিকে তাকিয়ে আছে বাংলার ১৮ কোটি মানুষ। অতিদ্রুত একটি নির্বাচন দিয়ে তাদের নিকট দায়িত্ব হস্তান্তর করাই হবে তাঁর কাজ। কিছু কিছু রাজনৈতিক দল ৫ আগষ্টের পর ১৯৭১ সালের স্বাধীনতাকে স্বীকার করেন না। যারা স্বাধীনতাকে অস্বীকার করেন তারা বাংলাদেশের নাগরিক দাবি করতে পারেন না। জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচনের দাবী একটি ষড়যন্ত্রের গন্ধ। বিএনপির ৬৫ লাখ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা রয়েছে। বিএনপির নেতাকর্মীরা মা-বাবার জানাযায় অংশগ্রহন করতে পারে নাই, বোনের বিয়েতে উপস্থিত থাকতে পারেন নাই। এসব তুলে গেলে চলবে না। বিএনপি জাতীয় সরকার গঠন করতে চায়। জাতীয় সরকার ছাড়া তিস্তার এই পরিকল্পনা বাস্তবায়ন বেগবান হবে না। তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের অবস্থান কর্মসূচির সুন্দরগঞ্জ পয়েন্টে প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপরোক্ত কথাগুলো বলেন তিনি।
‘জাগো বাহে, তিস্তা বাঁচাও’ ‘আইসো বাহে, তিস্তা বাঁচাই’ ‘ডাক দিয়েছে দুলু ভাই, ঘরে থাকার সময় নাই’ এসব শ্লোগান দিয়ে ফেস্টুন, ব্যানার নিয়ে মাইকে বিভিন্ন গান বাজিয়ে সকাল থেকে তিস্তাপাড়ে আসে উপজেলার পনের ইউনিয়ন ও একটি পৌর সভার মানুষজন। বিশেষ করে উপজেলার তারাপুর, বেলকা, হরিপুর, শান্তিরাম, কঞ্চিবাড়ি, চন্ডিপুর, শ্রীপুর ও কাপাসিয়া ইউনিয়নের ওপর দিয়ে প্রবাহিত তিস্তার ভাঙনের শিকার মানুষজনের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো।
গাইবান্ধা জেলা বিএনপির সভাপতি ও তিস্তা নদী রক্ষা আন্দোলন কমিটির সমন্বয়ক অধ্যাপক ডা. মইনুল হাসান সাদিকের সভাপতিত্বে অবস্থান কর্মসূচির আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব মো. মাহমুদুল ইসলাম প্রামানিকের সঞ্চালনায় আরো বক্তব্য রাখেন বিএনপির কেন্দ্রী কমিটির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যাপক মো. আমিনুল ইসলাম, জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি ডা. মো. জিয়াউল ইসলাম জিয়া, জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি ও হরিপুর ইউপি চেয়ারম্যান মো. মোজাহারুল ইসলাম, জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মো. মাহমুদুন নবী টিটুন, উপজেলা বিএনপির আহবায়ক মো. বাবুল আহমেদ, পৌর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত আহবায়ক মো. ইখতিয়ার উদ্দিন ভুইয়া নিপন, উপজেলা জামায়েতের আমীর মো শহিদুল ইসলাম মঞ্জু, সেক্রেটারি মো. আতাউর রহমান ও পৌর জামায়াতের আমির মো একরামুল হক প্রমুখ।
বক্তাগণ তিস্তা বাঁচাও আন্দোলনের কর্মসূচি সফলভাবে বাস্তবায়নের জন্য সকলকে আন্তরিকতার সাথে দায়িত্ব পালনের আহবান জানান। অবস্থান কর্মসূচিতে জেলা, উপজেলা, পৌরসভা ও পনেরটি ইউনিয়নের বিএনপি ও সহযোগি সংগঠনের নেতাকর্মীসহ তিস্তা পাড়ের মানুষজন উপস্থিত ছিলেন।