খবরবাড়ি ডেস্কঃ তিস্তা বাঁচাও আন্দোলনের উদ্যোগে গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জে ‘জাগো বাহে তিস্তা বাঁচাই’ তিস্তা নদীর পানির ন্যায্য হিস্যা আদায় ও তিস্তা মেগা প্রকল্প অবিলম্বে বাস্তবায়নের দাবীতে তিস্তা নদী তীরবর্তী অঞ্চলে দুইদিন ব্যাপী লাগাতার কর্মসূচী সফল করার লক্ষ্যে এক প্রস্তুতিমূলক সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
মঙ্গলবার (১১ ফেব্রুয়ারি) সকালে উপজেলার চন্ডিপুর ইউনিয়নের পাঁচপীর এলাকার তিস্তা ব্রীজ সংলগ্ন এলাকায় এ প্রস্তুতিমূলক সভা অনুষ্ঠিত হয়।
তিস্তা নদী রক্ষা আন্দোলন গাইবান্ধার সমন্বয়ক ও জেলা বিএনপির সভাপতি অধ্যাপক ডা. মো. মইনুল হাসান সাদিক-এর সভাপতিত্বে উক্ত প্রস্তুতিমূলক সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন তিস্তা প্রতিরক্ষা আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক ও বিএনপির রংপুর বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক সাবেক উপমন্ত্রী অধ্যক্ষ আসাদুল হাবিব দুলু।
‘জাগো বাহে তিস্তা বাঁচাই’ স্লোগানে ব্যানার-ফেস্টুন নিয়ে তিস্তা পাড়ের হাজার হাজার মানুষ উক্ত প্রস্তুতিমূলক সভায় যোগদান করেন।
উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব মাহমুদুল ইসলাম প্রামানিকের সঞ্চালনায় এতে আরো বক্তব্য রাখেন বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যাপক আমিনুল ইসলাম, জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি জাহাঙ্গীর আলম জিন্নাহ, ডা. জিয়াউর রহমান, মোজাহারুল ইসলাম, উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক বাবুল আহমেদ, পৌর বিএনপির আহ্বায়ক ইখতিয়ার হোসেন ভূঁইয়া নিপুন ও ইফতিয়ার হোসেন পপেন প্রমুখ।
এসময় দাবী আদায়ে তিস্তার পানির ন্যায্য হিস্যা আদায় ও তিস্তা মেগা প্রকল্প অবিলম্বে বাস্তবায়নের দাবীতে তিস্তা নদী রক্ষা আন্দোলনের উদ্যোগে ‘জাগো বাহে তিস্তা বাঁচাই’ শ্লোগানকে সামনে রেখে একটি সামাজিক আন্দোলন চলমান আছে। আগামী ১৭ ও ১৮ ফেব্রুয়ারি দুইদিন তিস্তা নদীর তীরবর্তী অঞ্চলে লাগাতার অবস্থান কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছে।
তিস্তা নদী রক্ষা আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক সাবেক উপমন্ত্রী অধ্যক্ষ আসাদুল হাবিব বলেন, তিস্তা অববাহিকার রংপুর অঞ্চলের মানুষের জীবন-জীবিকার মূল চালিকা শক্তি তিস্তা নদী। এক সময়ের প্রমত্ত তিস্তাকে এ অঞ্চলের জীবন রেখা বলা হতো। কিন্তু তিস্তা নদীর উজানে বাঁধ নির্মাণের কারণে তিস্তা নদী আজ শীর্ণ, স্থবির, একটি মৃতপ্রায় নদীতে পরিণত। বর্ষা ও খরা উভয় মৌসুমে তিস্তা এখন এ অঞ্চলের গণমানুষের মরণফাঁদ হয়ে উঠেছে। বর্ষাকালে ভারতের বাঁধ থেকে বিনা নোটিশে পানি ছাড়ায় তিস্তার দুকূল প্লাবিত হয়ে মানুষের ঘরবাড়ি, আবাদি ফসল মুহূর্তে নিশ্চিহ্ন করে, জনজীবন বিপন্ন করে তোলে। আবার খরার মৌসুমে তিস্তার পানি প্রবাহ প্রায় শূন্যের কোটায় নেমে আসে। ফলে তিস্তা নদীর দুইপাড়ের মাইলের পর মাইল এলাকা মরুভূমিতে পরিণত হয়ে চাষাবাদের অযোগ্য হয়ে পড়ে।
তিনি আরো বলেন, তিস্তা একটি আন্তর্জাতিক নদী। কিন্তু এই তিস্তা অববাহিকার মানুষ দীর্ঘ দিন পানির ন্যায্য হিস্যা থেকে বঞ্চিত। তিস্তা মেগা প্রকল্প বাস্তবায়নে চলছে রাজনৈতিক স্থবিরতা। তাই পানির ন্যায্য হিস্যা ও তিস্তা মেগা প্রকল্প বাস্তবায়ন করে তিস্তা নদী অববাহিকার মানুষের দুর্বিষহ বিপন্ন অবস্থা থেকে মুক্তির দাবিতে ১৭ ও ১৮ ফেব্রুয়ারি ৪৮ ঘণ্টা তিস্তা নদীর পাড়ে অবস্থান কর্মসূচি বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।