গাইবান্ধা প্রতিনিধিঃ গাইবান্ধার সাদুল্যাপুর উপজেলার নির্ভুত পল্লীতে পাওনা টাকাকে কেন্দ্র করে থানায় জিডি ও অভিযোগ করার ফলে চরম বিপাকে পড়েছে বাদি মোখলেছুর রহমান। আসামি জোয়াদ আলীর অব্যহত হুমকিতে মোখলেছুর রহমান তার পরিবার-পরিজন নিয়ে বাড়িছাড়া হয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, কথিত জোয়াদ আলী থানা পুলিশের সাথে সখ্যতা গড়ে তুলে দীর্ঘ বছর ধরে এলাকায় বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকান্ড নির্বিকারে চালিয়ে যাচ্ছে। একারণে জোয়াদ আলীর বিরুদ্ধে অভিযোগ করা হলেও কোন কর্নপাত করেনা পুলিশ প্রশাসন। ফলে এলাকার নিরিহ মানুষ জোয়াদের দাপটে মুখ খোলার সাহস পায় না।
এবিষয়ে শনিবার সকালে সরেজমিনে যাওয়া হলে, থানার এক অভিযোগের বিবরণে জানা যায়, সাদুল্যাপুর উপজেলার রসুলপুর ইউনিয়নের আরাজী ছান্দিয়াপুর গ্রামের দরিদ্র পরিবারের মৃত মুনছুর আলীর ছেলে মোখলেছুর রহমান পার্শ্ববর্তি বৈষ্ণবদাস গ্রামের জোয়াদ আলীর ছেলে কামাল মিয়াকে ১ বছর পুর্বে ১১ হাজার টাকা ধার দেন। মোখলেছুর রহমান তার পাওনা টাকা চাইতে গেলে জোয়াদ ও কামাল মিয়া বিভিন্ন কালক্ষেপন করতে থাকার এক পর্যায়ে পাওনাকৃত টাকা দেবেনা মর্মে জানায়। উল্টো মোখলেছুর রহমানকে হুমকি-ধামকি প্রদর্শন করেন। এ ঘটনায় গত ১২ মার্চ সাদুল্যাপুর থানায় একটি সাধারণ ডায়রী করেন মোখলেছুর রহমান। যার নং-৪৬৮।
ওই ডাইরীর প্রেক্ষিতে সাদুল্যাপুর থানার এএসআই সাইফুল ইসলাম ও নাজমুল হক তদন্ত করলে তা সত্যতা পান। এর ফলে এএসআই নাজমুল কর্তৃক নন এফআইআর প্রসিকিউন দেন। যার নং-৫৯/১৭। এদিকে জোয়াদ আলী গংরা ডাইরীর বিষয়ে নিশ্চিত হলে ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে গত ১৪ এপ্রিল কামাল মিয়া, জোয়াদ আলী ও জহির সরকার সহ আরও অনেক দলবদ্ধ হয়ে লাঠি ও ধারালো অস্ত্র নিয়ে মোখলেছুর রহমানের বসতবাড়ীতে হামলা চালায়। এসময় ঘরের বেড়া ভাঙ্চুর করে মোখলেছুর রহমানের পরিবারকে প্রাণনাশের হুমকি দেন। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে মোখলেছুর রহমান সাদুল্যাপুর থানায় আবারও একটি অভিযোগ দায়ের করেন। থানার ওসি ফরহাদ ইমরুল কায়েস বাদির অভিযোগ আমলে নিয়ে এসআই সানোয়ার হোসেনকে দায়িত্ব দেন। অপরদিকে গত ১৭ এপ্রিল অভিযোগ দায়ের হলেও রহস্যজনক কারেণে অদ্যবদি কোন ব্যবস্থা গ্রহন করেননি এসআই সানোয়ার হোসেন। এর ফলে আসামিদের অব্যহত হুমকিতে ঘড়ছাড়া হয়ে বেড়াচ্ছে বলে বাদি মোখলেছুরের অভিযোগ।
স্থানীয়রা আরও জানান, অভিযুক্ত কামাল মিয়ার বাবা জোয়াদ আলী বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকান্ডের সাথে জড়িত। ইতোপুর্বে রসুলপুর ইউনিয়নের কইপাড়া নামক এলাকার কিনামামুদের ছাগল চুরি করতে গিয়ে ধরা পড়ে জোয়াদ আলী। এসময় স্থানীয়রা জোয়াদ আলীর মাথা নেড়া করে দেয় জনগণ। পরে তৎকালীন ইউপি চেয়ারম্যান আবুল হোসেন সরকার বিষয়টি সমাধা করেন। এছাড়া পীরগঞ্জ উপজেলার মাদারগঞ্জ বন্দরের বিশিষ্ঠ ব্যবসায়ী রমনা শাহকে চিরকুট দিয়ে চাঁদা দাবী করে জোয়াদ আলী। এ ঘটনায় স্থানীয় লোকজন তাকে আটক করে গণধোলাই দিয়ে পীরগঞ্জ থানা পলিশে সোপর্দ করেন। শুধু তায় নয়, সম্প্রতি রাজধানী ঢাকার এক মেয়েকে রৌপ মুদ্রার প্রলোভন দিয়ে বৈষ্ণবদাস এলাকায় ডেকে আনেন। এসময় ওই মেয়ের কাছ থেকে লক্ষাধিক টাকা প্রতারণামূলক হাতিয়ে নেয় জোয়াদ আলী। এরপর কয়েকজন মিলে মেয়েটিকে সম্ভ্রমহানি ঘটায়। এবিষয়ে জানাজানি হলে পার্শ¦বর্তি খোর্দ্দ রসুলপুর গ্রামের মোজা মিয়ার সহযোগিতায় মেয়েটি থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন।
আরাজী ছান্দিয়াপুর গ্রামের ভুক্তভোগী মোখলেছুর রহমান বলেন, এ ঘটনায় স্থানীয় ইউপি মেম্বর সহ গন্যমান্য ব্যক্তির কাছে বিচার চাইলেও তারা কোন মিমাংসা করেনি। আমরা গরিব মানুষ বলে আমাদের কথা কেউ শোনেনা। তিনি আরও জানান, বাধ্য হয়ে থানায় জিডি ও অভিযোগ করা হলেও পুলিশের ভূমিকা রহস্যজনক। বর্তমানে আসামীদের অব্যহত হুমকিতে রাতের বেলায় গা-ঢাকা দিয়ে বেড়াতে হচ্ছে।
সাদুল্যাপুর উপজেলার রসুলপুর ইউনিয়নের ইউপি মেম্বর আব্দুর রাজ্জাক ও আতোয়ার রহমান এসব ঘটনার সত্যতা শিকার করে বলেন, মোখলেছুর রহমানের ঘটনাটি একধিকবার সমাধানের চেষ্ঠায় ব্যর্থ হয়েছি। স্থানীয় সালিশে জোয়াদ আলীকে উপস্থিত হননি।
এবিষয়ে সাদুল্যাপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) ফরহাদ ইমরুল কায়েস জানান, বিষয়টি ক্ষতিয়ে দেখা হবে।