ডিম দেখতে
ছোটো, গায়ে কালো কালো দাগ থাকে। থাকে। কোয়েলের পালক সাদা, কালচে – এরা
বছরে ২৫০-২৮০ টি ডিম পাড়ে বা সাদা-কালো মেশানো রঙের হয়। – ডিমের ওজন হয়
১০-১২ গ্রাম।
আমরা অনেকেই কোয়েলের ডিম
বেশ পছন্দ করি কিন্তু এই ডিমের পুষ্টিগুণ সম্পর্কে জানি না। যারা জানতে
আগ্রহী তাদের জন্যই আমাদের আজকের আলোচনা কোয়েলের ডিম এবং এর পুষ্টিগুণ
নিয়ে। পৃথিবীতে যত প্রকার খাদ্য উপযোগী ডিম আছে তার মধ্যে কোয়েল পাখির ডিম
গুণে মানে এবং পুষ্টিতে সর্বশ্রেষ্ঠ।
চল্লিশ বছর পার হলেই ডাক্তাররা মুরগির ডিম খেতে
নিষেধ করে থাকেন। কারণ নিয়মিত মুরগির ডিম খেলে কোলেস্ট্ররলের মাত্রা বেড়ে
যায় ফলে হৃদরোগ হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দেয়। অথচ কোয়েলের ডিম নিঃসংকোচে যে
কোনো বয়সের মানুষ অর্থাৎ বাচ্চা থেকে বৃদ্ধরা খেতে পারেন।
এতে ক্ষতির কোনো কারণ নেই বরং নিয়মিত
কোয়েলের ডিম খেলে দেহের প্রয়োজনীয় পুষ্টি চাহিদা পূরণ হয় এবং অনেক কঠিন
রোগ থেকে আরোগ্য লাভও হতে পারে। কোয়েলের ডিম হার্ট ডিজিজ, কিডনি সমস্যা,
অতিরিক্ত ওজন, রোগ প্রতিরোধ, পাকস্থলী ও ফুসফুসের নানা রোগ, স্মৃতি শক্তি
রক্ষা, রক্তের পরিমান কমে যাওয়া, উচ্চ কোলেস্টেরল কমাতে সহায়তা করে থাকে।
চলুন এবার জেনে নেই কোয়েলের ডিমে যে পুষ্টি উপাদানগুলো বিদ্যমান থাকে-
কোয়েলের ডিম প্রাণীজ খাদ্যদ্রব্য হলেও এর
মধ্যে প্রোটিন, ভিটামিন, মিনারেল, এনজাইম এবং অ্যামাইনো এসিড এমন মাত্রায়
থাকে যে এই ডিম খেলে শরীরে সব ধরণের পুষ্টির অভাব পূরন হয় এবং শরীরের
কার্যক্ষমতা বেড়ে যায়। মুরগির ডিমের সঙ্গে তুলনা করে দেখা যায় কোয়েলের ডিমে
কোলেস্টেরল থাকে ১.৪% অন্যদিকে মুরগির ডিমে থাকে ৪%।
আর কোয়েলের ডিমের কুসুমে প্রোটিনের পরিমান
মুরগির থেকে শতকরা প্রায় সাত গুণ বেশি থাকে। কোয়েলের ডিমে ভিটামিন বি-১ এর
পরিমাণ মুরগির ডিম থেকে প্রায় ছয়গুণ বেশি। ফসফরাস ও আয়রনও থাকে প্রায় পাঁচ
গুণ বেশি। এছাড়াও কোয়েলের ডিমে এমন কিছু উপাদান আছে যা শরীরে অ্যান্টিবডি
তৈরি করে যা অ্যালার্জিক প্রতিক্রিয়াকে নষ্ট করে।
শরীরের প্রয়োজনীয় সব ধরনের ভিটামিন,
মিনারেল এবং অ্যামাইনো এসিড, কোয়েল ডিমে বিদ্যমান। যার কারণে কোয়েলের ডিম
কোন কোন দেশে মেডিসিন হিসেবে ব্যবহার করা হয়। নিয়মিত কোয়েলের ডিম খেলে
হার্টের কার্যক্ষমতা উন্নত হয়, কিডনি এবং লিভারের কার্যক্ষমতা ও হজমশক্তি
বাড়ে এবং অ্যাসিডিটি কমাতে সাহায্য করে থাকে।
এছাড়া ব্রেইন সবসময় সতেজ রাখে এবং
স্মৃতিশক্তি ভালো থাকে। বাচ্চাদের মানসিক, শারীরিক এবং বুদ্ধিমত্তার বিকাশ
ঘটাতে সহায়তা করে থাকে কোয়েলের ডিম। দুর্বল বাচ্চা থেকে বৃদ্ধরা প্রতিদিন
তিন/চারটা করে কোয়েলের ডিম খেতে পারেন। কোয়েল পাখির ডিমে প্রতি একশ গ্রামে
রয়েছে ১৩.০৫ গ্রাম প্রোটিন এবং ১৫৮ ক্যালরি।
এছাড়া পর্যাপ্ত পরিমাণ ভিটামিন ও মিনারেল
বিদ্যমান। মুরগীর ডিমের তুলনায় এর পুষ্টিমান প্রায় তিন থেকে চারগুণ বেশি।
কোয়েলের ডিম মানুষের ইমিউন সিস্টেমকে শক্তিশালী করে তোলে। এছাড়াও এটি
পাকস্থলির সমস্যা দূর করে।
চাইনিজরা কোয়েলের ডিমকে টিবি, অ্যাজমা এবং
ডায়াবেটিস রোগের পথ্য হিসেবে ব্যবহার করে থাকেন। কিডনি ও লিভারের সমস্যা
দূর করতেও এই ডিমের রয়েছে কার্যকর ভুমিকা।