খবরবাড়ি ডেস্কঃ উত্তর জনপদে আলুর ভান্ডার খ্যাত গাইবান্ধা এবার আলুর বাম্পার ফলন হয়েছে। অতীতের চেয়ে এবার আলুর উৎপাদন অনেক বেশি হলেও ন্যায্য মূল্য পাওয়া নিয়ে শস্কায় রয়েছেন চাষীরা।
জেলা কৃষি অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায় ,আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় জেলার ৭ উপজেলা সুন্দরগঞ্জ, সাদুল্লাপুর, গাইবান্ধা সদর, গোবিন্দগঞ্জ, পলাশবাড়ী, ফুলছড়ি ও সাঘাটায় এ বছর ১০ হাজার ৫৫০ হেক্টর জমিতে আলু চাষরে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এরমধ্যে উফশী জাতের আলুর চাষ হয়েছে ৭ হাজার ৫১০ হেক্টর ও দেশি জাতের আলু ৭৫০ হেক্টরসহ ৮ হাজার ২৬০ হেক্টর জমিতে চাষ হয়েছে। উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ১৯.৮১ মেট্রিকটন।
আলু চাষীরা জানান, জমি থেকে আলু তুলতে শ্রমিকদের খরচ বহন করতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। এছাড়া জেলার বাইরের ব্যবসায়ীদরে সাথে যোগাযোগ করতে না পারায় স্থানীয় মধ্যস্বত্ব ভোগীদের কাছে আলু বিক্রয় করতে হয়। ফলে কৃষকের চেয়ে বেশি লাভবান হচ্ছেন মধ্যস্বত্ব ভোগী আলু ব্যবসায়ীরা।
সুন্দরগঞ্জ উপজলোর আলু চাষী গোলাম রাব্বানী জানান, হঠাৎ বাজারে আলুর দাম কমে যাওয়ায় তেমন লাভ হচ্ছে না। গত কয়েকদিনে আগেও প্রতি বস্তা (৮০ কেজি) আলুর প্রকারভেদে ২৮শ’ থেকে ৩ হাজার টাকা বিক্রি হয়েছে। এখন আলু বিক্রয় হচ্ছে ৮শ’ থেকে ৯শ’ টাকা বস্তা।
একই এলাকার আলু চাষী আল আমিন মিয়া জানান, দুই বিঘার জমিতে আলু চাষ করেছি। এখনো আলু তোলা শেষ হয়নি। সম্পূর্ণ আলু তোলার পর বোঝা যাবে লাভক্ষতি। অনেক আলু চাষী তাদের জমি থেকে সরাসরি আলু ব্যবসায়ীদের কাছে বিক্রি করায় তেমন একটা লাভ করতে পারচ্ছেন না।
আলু চাষী ছানোয়ার মিয়া জানান, এক বিঘা জমিতে ২০ বস্তা (৪০ মন) আলু উৎপাদন হয়। বিঘাপ্রতি খরচ হয় ২০ হাজার টাকার উপরে। আর ২০ বস্তা আলু বিক্রি হচ্ছে ১৬ থেকে ১৭ হাজার টাকা। সব খরচ বাদ দিয়ে বিঘা প্রতি ৪/৫ হাজার টাকা ক্ষতি।
গাইবান্ধা পুরাতন বাজারের মধ্যস্বত্ব ভোগী আলু ব্যবসায়ী ফারুক মিয়া বলেন, আমরা কৃষকের জমি থেকে কম দামে আলু কিনে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় সরবরাহ করি। এখানে শ্রমিকদের খরচ দিয়েও মোটামুটি ভালোই লাভ হয়।
গাইবান্ধা কৃষি সম্প্রসারণ অধদিপ্তরের উপপরচিালক খোরশদে আলম বলেন, এবার গাইবান্ধা আবহাওয়া অনুকূলে থাকা ও শৈত্যপ্রবাহ কম হওয়ায় আলুর বাম্পার ফলন হয়েছে। এ ছাড়াও কৃষি সম্প্রসারণ অধদিপ্তরের মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা কৃষকদের কাছে গিয়ে আলুর ফলন বৃদ্ধি করতে পরামর্শ দিয়েছে। আগামীতেও লক্ষ্যমাত্রা ধরে রাখতে ও আলু চাষ বাড়াতে কৃষকদের সবধরনের সহযোগিতা করবে কৃষি বিভাগ। আলুর বেশি উৎপাদনের জন্য কৃষকদের নিয়ে উঠান বৈঠকসহ বিভিন্ন কর্মসূচি নেওয়া হবে।