বাণিজ্যিক ব্যাংকের মতো ব্যাংক বহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর সুদহার গণনায়ও নতুন নিয়ম চালু করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এতে আর্থিক প্রতিষ্ঠানে বাড়বে আমানত ও ঋণের সুদ। এখন থেকে আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো সর্বোচ্চ ৯ দশমিক ১৩ শতাংশ হারে সুদ নিতে পারবে। আর তাদের ঋণ বা বিনিয়োগে সর্বোচ্চ সুদহার হবে ১২ দশমিক ১৩ শতাংশ।
এ ছাড়াও অতিক্ষুদ্র, ক্ষুদ্র, কুটির ও মাঝারি শিল্প (সিএমএসএমই) এবং ভোক্তা ঋণের আওতাধীন ব্যক্তিগত ঋণ ও গাড়ি ক্রয় ঋণে আরও ১ শতাংশ তদারকি মাশুল যুক্ত করা যাবে। ফলে এসব ঋণে সুদহার হবে সর্বোচ্চ ১৩ দশমিক ১৩ শতাংশ। বর্তমানে আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের কাছে রাখা আমানতের ওপর সর্বোচ্চ ৭ শতাংশ ও বিতরণ করা ঋণে সর্বোচ্চ ১১ শতাংশ সুদ দিতে বা নিতে পারে।
আজ মঙ্গলবার ( ২০ জুন ) বাংলাদেশ ব্যাংক এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করে তা আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালকদের কাছে পাঠিয়েছে। নতুন নির্দেশনা ১ জুলাই থেকে কার্যকর হবে বলেও প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, সুদহার নির্ধারিত হবে ১৮২ দিন মেয়াদি ট্রেজারি বিলের গড় সুদের ওপর। সেই সুদ কত হবে, তা-ও জানিয়েছে নিয়ন্ত্রক সংস্থাটি। বাংলাদেশ ব্যাংকের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়েছে, ১৮২ দিন মেয়াদি ট্রেজারি বিলের গড় সুদের হার হবে ৭ দশমিক ১৩ শতাংশ। যে হিসাবের ওপর ভিত্তি করে এই হার নির্ধারণ করা হয়েছে, তার নাম দেয়া হয়েছে সিক্স মান্থস মুভিং অ্যাভারেজ রেট অব ট্রেজারি বিল।
বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, কোনো সুদ আরোপ করার পর ছয় মাসের মধ্যে তা পরিবর্তন করা যাবে না। এর মধ্যে সুদহার বাড়লেও ব্যাংক থেকে গ্রাহকের সুদ বাড়ানো যাবে না। আবার সুদহার কমলেও গ্রাহকের সুদ কমবে না।
বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর ক্ষেত্রে শুধু ঋণের সুদহার নির্ধারণ করা হলেও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে আমানত ও ঋণের সুদহার নির্ধারণ করে দেয়া হলো।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তারা বলছেন, অনেক দুর্বল প্রতিষ্ঠান ঝুঁকি সত্ত্বেও বেশি সুদে আমানত নিয়ে কম সুদে ঋণ দেয়। এ জন্য দুটো সুদহারই নির্ধারণ করে দেয়া হয়েছে।
ব্যাংক উদ্যোক্তা ও ব্যবসায়ীদের উদ্যোগে ঋণের ক্ষেত্রে ৯ শতাংশ সুদহার কার্যকর হয় ২০২০ সালের এপ্রিলে। বাংলাদেশ ব্যাংক ৯ শতাংশ সুদহার বেঁধে দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করে। আর গত বছরের জুলাই থেকে আর্থিক প্রতিষ্ঠানের আমানত ও ঋণে সুদহার কার্যকর হয় ৭ ও ১১ শতাংশ।
দেশের ৩৪টি আর্থিক প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ১০টির মতো প্রতিষ্ঠান সংকটে পড়েছে। গ্রাহকদের জমানো টাকা সময়মতো ফেরত দিতে পারছে না তারা।