আগামী রোববার থেকে দেশে প্রতিদিন ৩ ঘণ্টা ইন্টারনেট ও ডিশ সংযোগ বন্ধ থাকবে। ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) বিভিন্ন এলাকার ঝুলন্ত ইন্টারনেট ও ডিশের ক্যাবল অপসারণের প্রতিবাদে এ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (আইএসপিএবি)।
করোনাকালীন সময়ে এ সিদ্ধান্তে বিড়ম্বনায় পড়তে যাচ্ছেন দেশের কোটি মানুষ।
জানা গেছে, গত ৩০ জুলাই ডিএসসিসির বাজেট ঘোষণা অনুষ্ঠানে মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস নগরীতে অবৈধ দৃষ্টিকটূ ও ঝুঁকিপূর্ণ ক্যাবল অপসারণ করার ঘোষণা দেন। মেয়রের এমন ঘোষণার পর ৫ আগস্ট থেকে নগরজুড়ে ঝুলন্ত ক্যাবল অপসারণে নামে ডিএসসিসির ভ্রাম্যমাণ আদালত।
ইন্টারনেট ও ক্যাবল টিভি ব্যবসায়ীদের কয়েকজন বলছেন, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন ইন্টারনেট ও ক্যাবল টিভি সংযোগের বিকল্প ব্যবস্থা না করে এভাবে তার কাটায় ব্যবসায়ীরা ক্ষতির মুখে পড়েছেন। ইতোমধ্যে আইএসপিএবি এবং কোয়াবের আনুমানিক ২০ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। আগামী রোববার থেকে দেশের ইন্টারনেট ও ক্যাবল টিভি সেবা আংশিকভাবে বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সংযোগদাতা প্রতিষ্ঠানগুলো।
ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডার্স অ্যাসোসিয়েশন অফ বাংলাদেশের (আইএসপিএবি) সভাপতি এম এ হাকিম বলেন, ডিএসসিসি ইন্টারনেট ও ডিশ ক্যাবল অপসারণ অভিযান বন্ধ না করলে রোববার থেকে প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত তিন ঘণ্টা সেবা বন্ধ থাকবে।
এদিকে, রাজধানীর বিভিন্ন স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীদের অভিভাবকরা আছেন উৎকণ্ঠায়। রাজধানীর এক গৃহিণী জানান, সমন্বয়হীনতার এই বেড়াজালে বলির পাঠা হচ্ছি আমরা। মেয়ের ক্লাস, পরীক্ষা সব হচ্ছে ইন্টারনেটে। এরজন্য ব্রডব্যান্ড সংযোগই ভরসা। মোবাইল ইন্টারনেট সহজলভ্য না আবার নেটওয়ার্কের গতিও স্থির থাকে না। আবার নাকি ডিস বন্ধ থাকবে। আমরা গ্রাহকেরা অর্থ খরচ করেও সেবা পাবো না। উল্টো ভোগান্তিতে পড়তে হবে।
তথ্যপ্রযুক্তি খাতের শীর্ষ সংগঠন বেসিসের পরিচালক দিদারুল আলম সানি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর স্বপ্ন বাস্তবায়নে যে ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণের পথে আমরা এগোচ্ছি, এমন সিদ্ধান্ত সেই পথে একটা বড় বাধা। তবে তাদের এমন ধর্মঘট ডাকার সিদ্ধান্তও যৌক্তিক। তার সম্প্রসারণের বিকল্প না করেই যদি তার কাটা হয় তাহলে তারাই বা কী করবে?
‘একটা সুপারশপের পজ (পয়েন্ট অব সেল) মেশিনও ইন্টারনেটে চলে। একদম তৃণমূল পর্যায়েও এর বিরূপ প্রভাব পড়বে। আমরা সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে ইতোমধ্যে যোগাযোগ রাখছি যেন বিষয়টির একটা সুরাহা হয়।’
তিনি আরও বলেন, ইন্টারনেট সংযোগ বিচ্ছিন্ন থাকলে আমাদের প্রচুর ক্ষতি হবে। আমরা সার্ভিস দিতে না পারলে বিদেশি গ্রাহকেরা আমাদের থেকে মুখ ফিরিয়ে নিতে পারেন। এটা তো আর সাবমেরিন ক্যাবলের সমস্যা না যে পুরো পৃথিবীজুড়ে হচ্ছে। বিদেশি ব্যবসায়ীদের কাছে এই বার্তাই যাবে যে, এই দেশে সরকার আর ব্যবসায়ীদের মধ্যে সম্পর্কের টানাপড়েনে এমনটা হচ্ছে।