সিলেট নগরীতে পূর্ব বিরোধের জের ধরে সংঘর্ষ ও গোলাগুলিতে দুজন নিহত ও অর্ধশতাধিক আহত হয়েছেন।
মঙ্গলবার বেলা ১১টার দিকে নগরীর দক্ষিণ সুরমা বরইকান্দি এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
নিহতরা হলেন- বাবুল আহমদ ও মাসুক মিয়া। তাদের বাড়ি একই এলাকায়।
স্থানীয়রা জানান, বেলা ১১টার দিকে পূর্ব বিরোধের জের ধরে আলপু চেয়ারম্যান ও গৌছ উদ্দিনের লোকজনের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়। এসময় উভয় পক্ষের মধ্যে ব্যাপক গুলাগুলির ঘটনা ঘটে।
এতে কয়েকজন গুলিবিদ্ধ হয়। তাদের উদ্ধার করে এমএজি ওসমানী মেডিকেল হাসপাতালে নেয়ার পথে গৌছের পক্ষের দুজনের মৃত্যু হয়।
দক্ষিণ সুরমা থানার ওসি খায়রুল ফজল জানান, কথাকাটির জের ধরে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে দুপক্ষ। এর আগে সোমবার রাতেও তাদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়।
নগরীর দক্ষিণ সুরমার বরইকান্দি ৩নং রোডে এক যুবকের সঙ্গে কথা কাটাকাটি জের ধরে ১০নং রোডের বাসিন্দাদের মধ্যে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
নিহতদের মৃতদেহ এমএজি ওসমানী মেডিকেল হাসপাতাল মর্গে রাখা হয়েছে বলে জানান ওসি।
সিলেটে সংঘর্ষে মাদ্রাসাছাত্রসহ নিহত ২
সিলেট জেলার জৈন্তাপুর উপজেলায় ওয়াজ মাহফিল বন্ধ করা নিয়ে সুন্নি গ্রুপ ও ওহাবি গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষে দুজন নিহত হয়েছেন। এসময় আহত হয়েছেন আরো অন্তত অর্ধশতাধিক লোক।
সোমবার রাত ১২টার দিকে জৈন্তাপুর উপজেলার ৪নং-বাংলাবাজার আমবাড়ি এলাকায় এ সংঘর্ষ শুরু হয়। পরে দফায় দফায় এ সংঘর্ষ চলে মঙ্গলবার ভোর পর্যন্ত।
নিহত মোজাম্মিল হোসেন (২৫) হরিপুর মাদ্রাসার দাওয়ারা হাফসির শেষ বর্ষের ছাত্র। তার বাড়ি গোয়াইনঘাট উপজেলার ডৌবাড়ি এলাকায়। আরেকজনের পরিচয় তাৎক্ষণিক পাওয়া যায়নি।
আহতদের মধ্যে ত্রিশজনকে সিলেট এমএজি ওসমানি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, আমবাড়ি এলাকায় একটি ওয়াজ মাহফিলের আয়োজন করে ওহাবিরা। এ সংবাদ পেয়ে সুন্নি সম্প্রদায়ের লোকেরা সেই ওয়াজ মাফিল বন্ধ করতে সরেজমিনে গেলে তাদের উভয় গ্রুপের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়।
একপর্যায় তারা সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। সংঘর্ষে এদিক-ওদিক ছুটাছুটি করতে থাকেন ওয়াজ মাহফিলে থাকা শত শত মুসল্লিরা।
প্রথম দফা সংঘর্ষে ওহাবি গ্রুপ সুন্নি সম্প্রদায়ের মুসল্লিদের মারপিট করে তাড়িযে দেয়। এসময় ঘটনাস্থলে নিহত হন সুন্নি গ্রুপের মুসল্লি হরিপুর মাদ্রাসার ছাত্র মোজাম্মিল হোসেন। পরে ওসমানি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়ার পর আরও একজনের মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন অন্তত অর্ধশতাধিক। তাদের সেখানেই ভর্তি করা হয়েছে।
পরে এ সংবাদ ছড়িয়ে পড়লে দ্বিতীয় দফায় হামলা চালায় সুন্নি সম্প্রদায়ের মুসল্লিরা। তখন ওহাবি গ্রুপের লোকেরা প্রাণ বাঁচাতে স্থানীয় এলাকার বিভিন্নবাসা বাড়িতে গিয়ে আশ্রয় নিলে সুন্নি মুসল্লিরা বাসা বাড়িতে হামলা চালায়। এ সময় সুন্নিপন্থিরা চারটি গ্রাম জ্বালাও পোড়াও, ভাংচুর চালায়। এসংঘর্ষ মঙ্গলবার ভোর পর্যন্ত চলে।
পরে জৈন্তাপুর মডেল থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে স্থানীয় এলাকার চেয়ারম্যান ও মাতব্বরদের সহযোগীতায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
এ বিষয়ে জৈন্তাপুর মডেল থানার ওসি ময়নুল জাকির জানান, ঘটনাস্থলে পুলিশের পাশাপাশি র্যাব, সদস্যরা টহল দিচ্ছেন। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত পাওয়া তথ্যমতে, পরিস্থিতি এখন নিয়ন্ত্রণে আছে।