রংপুর থেকে ফিরে আল কাদরীয়া কিবরীয়া সবুজ:-
রংপুর সহ আট জেলার কৃষকেরা আলু চাষ করে এবার মোটা অংকের লোকসানের মুখে পড়েছে কৃষকগণ। অনেক কৃষক আলুর উৎপাদন খরচই তুলতে পারছে না। রংপুর সহ আট জেলার বিভিন্ন হাট বাজারে প্রতি কেজি আলু প্রকার ভেদে বিক্রি হচ্ছে চার থেকে ছয় টাকা কেজিতে। তবে কৃষকরা জানান, এ দামেও ক্রেতা পাওয়া যাচ্ছে না। তাদের প্রতি কেজি আলু উৎপাদনে খরচ হয়েছে সাত থেকে আট টাকা। রংপুর জেলার সবচাইতে বেশি আলু উৎপাদন হয় রংপুর সদর, পীরগাছা ও মিঠাপুকুর উপজেলায়। তবে এবার শীত ও ঘন কুয়াশার কারনে উৎপাদন খরচও বেড়েছে। গত বছর এক একর জমিতে আলু চাষ করতে খরচ হয়েছিল ষোল হাজার টাকা। এবার তা বেড়ে দাড়িয়েছে বিষ থেকে বাইশ হাজার টাকা। এই এলাকায় সবচেয়ে বেশি আলু চাষ হয় কার্ডিনাল জাতের আলু। এই আলু জেলার হাট বাজার গুলোতে প্রতি বস্তা বিক্রি হচ্ছে ছয়শত টাকা গ্রানুল পাঁচশত টাকা এবং ডায়মন্ড জাতের পাঁচশত পঞ্চাশ দরে কেনাবেচা হচ্ছে। তবে এই দামেও ক্রেতা পাওয়া যাচ্ছে না বলে জানান কৃষকেরা। রংপুর জেলার পীরগাছা উপজেলার পারুল ইউনিয়নের বিরাহিম গ্রামের আলু চাষী দুলাল সরকার এ প্রতিবেদককে জানান, এবার তিনি সাত একর জমিতে কার্ডিনাল জাতের আলু চাষ করেছেন। খরচ হয়েছে প্রায় চার লাখ টাকা। আর আলু বিক্রি করছেন পাঁচ টাকা কেজি দরে। তিনি বলেন, আলুর বীজ, কীটনাশক ও কিষাণের দাম বেড়ে যাওয়ায় এবার আলুর উৎপাদন খরচও বেড়েছে। এ বছর জমি তৈরি থেকে শুরু করে বীজ রোপন এবং আলু ঘরে তোলা পর্যন্ত একরে খরচ হয়েছে আঠারো হাজার টাকা। একদিকে দাম কম অন্যদিকে ক্রেতা না থাকায় আলু বিক্রি করা সম্ভব হচ্ছে না। মউসুমের শুরুতেই দেশের বিভিন্ন জেলায় রংপুরের আলুর চাহিদা ছিল। গত বছর প্রচুর পরিমানে আলু রপ্তানিও করা হয়। তখন জাত ভেদে প্রতি বস্তা আলুথার৭০০/৮০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। কিন্তু চলতি মাসের শুরু থেকে বাইরের জেলায় আলু রপ্তানী বন্ধ হয়ে যায়। ফলে সরবরাহ অনুযায়ী ক্রেতা না থাকায় আলুর দাম পড়ে গেছে বলে চাষী ও ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন। রংপুর জেলার সিটি বাজারের অালুর আড়ৎদার রাসেল হোসেন জানান, বাজারে আলুর সরবরাহ প্রচুর কিন্তু সে তুলনায় ক্রেতা নেই। বাইরের জেলায় এবার আলুর ফলন ভালো হওয়ায় এসব জেলায় এবার বৃহত্তর রংপুরের আলু যাচ্ছে না ফলে দামও কমে গেছে। রংপুর নগরীর শালবন এলাকার আলু ব্যবসায়ী জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন গত বছর প্রতি বস্তা আলু এক হাজার থেকে বারো শত টাকা দরে কিনে হিমাগারে রেখেছিলাম। মওসুম শেষে সে আলু বিক্রি করে কয়েক লাখ টাকা লোকসান দিতে হয়েছে। রংপুর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সৃত্রে জানা গেছে চলতি মওসুমে রংপুরের আট উপজেলায় ৫১ হাজার ২৭৫ হেক্টর জমিতে আলু চাষ হয়েছে। উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ১০ লাখ১ হাজার ৪শ’ মেট্রিক টন।