লাখো মানুষের শ্রদ্ধা ও ভালবাসায় চিরনিদ্রায় শায়িত চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক মেয়র চট্রলার বীর মহিউদ্দিন চৌধুরী।
শুক্রবার বিকালে চশমা হিলের পারিবারিক কবরস্থানে মহিউদ্দিন চৌধুরীর দাফন সম্পন্ন হয়।
এর আগে সাবেক মেয়র এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরী জানাজা চট্টগ্রামের লালদীঘি ময়দানে লাখো মানুষের অংশগ্রহণে সম্পন্ন হয়। এসময় তাকে জানানো হয় গার্ড অব অনার প্রদান করা হয়।
এরও আগে বাদ জুম্মা চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র এ বি এম মহিউদ্দিন চৌধুরীকে আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয়ের সামনে সর্বস্তরের জনগণ শেষ শ্রদ্ধা নিবেদন করে।
এদিকে, প্রবীণ এই আওয়ামী লীগ নেতার মৃত্যুতে শোক জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ, আওয়ামী লীগের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, বিএনপি সহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল।
উল্লেখ্য বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত তিনটার দিকে চট্টগ্রাম নগরীর মেহেদিবাগে বেসরকারি ম্যাক্স হাসপাতালে তিনি চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নি:শ্বাস ত্যাগ করেন। ম্যাক্স হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ডা. লিয়াকত আলী খান চট্টল বীরের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিলো ৭৪ বছর।
মহিউদ্দিন চৌধুরীর বড় ছেলে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল বলেন, ডাক্তাররা আপ্রাণ চেষ্টা করেছেন। শেষ পর্যন্ত লাইফ সাপোর্ট দিয়ে রেখেছিলেন। রাত ৩টায় তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।
আরো উল্লেখ্য গত ১১ নভেম্বর শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তাকে চট্টগ্রামের বেসরকারি ম্যাক্স হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরদিন ১২ নভেম্বর ভোররাতে তাকে হাসপাতালটির নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) নেওয়া হয়। হাসপাতালে ভর্তির পর শারীরিক অবস্থার উন্নতি হলেও কিডনি ও কার্ডিয়াক সমস্যার কারণে তাকে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে ঢাকার স্কয়ার হাসপাতালে নেওয়া হয়।পরে চিকিৎসকদের পরামর্শে তাকে সিঙ্গাপুরে নেওয়া হয়। সেখানে তার হার্টে রিং পরানো হয়। দেশে ফেরার পর নগরীর ম্যাক্স হাসপাতালে ডায়ালাইসিস চলছিল বর্ষীয়ান এই নেতার। এরপর মহিউদ্দিন চৌধুরীর শারীরিক অবস্থার আরো অবনতি হলে বৃহস্পতিবার তাকে আবার নগরীর মেহেদিবাগে বেসরকারি ম্যাক্স হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। আর সেখানেই তিনি শেষ নি:শ্বাস ত্যাগ করলেন।
প্রায় ১৭ বছর চট্টগ্রামের মেয়র ছিলেন মহিউদ্দিন। রাজনীতি ও সমাজসেবায় অসামান্য অবদানের জন্য চট্টগ্রামবাসী তাকে চট্টল বীর হিসেবে জানে। মহিউদ্দিন চৌধুরীর মৃত্যুর খবর শুনে রাতেই হাসপাতালের সামনে ভিড় করেন বিপুলসংখ্যক নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষ। এ সময় তাদের অনেকেই কান্নায় ভেঙে পড়েন।
১৯৪৪ সালের ১ ডিসেম্বর চট্টগ্রামের রাউজান উপজেলার গহিরা গ্রামে জন্ম নেন এই নেতা। ১৯৯৪ সালে প্রথমবারের মতো মেয়র নির্বাচিত হন। এর পর মোট তিন দফা চট্টগ্রামের নগর পিতা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন তিনি।