মায়ানমারের আরাকান রাজ্যে রোহিঙ্গা মুসলমানদের ওপর অব্যাহত হত্যাকাণ্ড ও নির্যাতনের মধ্যেই বাংলাদেশ সীমান্তজুড়ে ভূমিমাইন বসাচ্ছে মায়ানমার।
মায়ানমার সেনাবাহিনীর দমন নিপীড়ন থেকে বাঁচতে বাংলাদেশ সীমান্ত পাড়ি দিতে গিয়ে রোহিঙ্গারা এখন স্থলমাইন আতঙ্কে ভুগছেন। জিরো পয়েন্টে অবস্থান নেয়া রোহিঙ্গারা যাতে মায়ানমারে ঢুকতে না পারে সে জন্য বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুমের তুমব্রু এলাকার মায়ানমার অংশে এক সপ্তাহ ধরে স্থলমাইন বসানো হচ্ছে বলে জানান একাধিক রোহিঙ্গা ও স্থানীয় বাংলাদেশিরা।
এদিকে গত তিন দিনে মায়ানমার সীমান্তরক্ষী বাহিনীর বসানো মাইন বিস্ফোরণে এক রোহিঙ্গা নারীসহ দুই শিশু গুরুতর আহত হয়ে বর্তমানে কুতুপালং ইউএনএইচসিআর হাসপাতালে মৃত্যুর সাথে পাঁঞ্জা লড়ছে।
বিজিবি জানিয়েছে, মঙ্গলবার তারা মায়ানমার সীমান্তে অন্তত দুটি বিস্ফোরণের শব্দ শুনেছে। এতে দুই শিশু আহত হয়েছে যার মধ্যে এক শিশুর একটি পা উড়ে গেছে। পরে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
তুমব্রু খালের তীরে নো-ম্যানস ল্যান্ডে অবস্থান নেয়া নূর হোসাইন নামের এক রোহিঙ্গা বলেন, মঙ্গলবার তুমব্রুতে মায়ানমার সেনাবাহিনীর সদস্যরা গুলি চালিয়েছে। বহু ঘরে আগুন দিয়েছে। আমরা যাতে ওই পারে ঢুকতে না পারি সেজন্য কয়েকদিন ধরে তারা সীমান্তে মাইন বসাচ্ছে। কয়েকটি মাইন খালী চোখে দেখা গেছে। এরই মধ্যে এখানে দু’দিনে চারটি মাইন বিস্ফোরণ হয়েছে।
মঙ্গলবার সীমান্তের ৩৪ নং পিলারের কাছে দুপুর ১টার দিকে মায়ানমারের উত্তর পাড়ার শাকের আহমদের ছেলে কায়সার (১০) ও নুরুল আমিনের ছেলে আলম (৭) স্থলমাইন বিস্ফোরণে গুরুতর আহত হয়।
এছাড়া গত সোমবার ২ টার দিকে ৩১নং পিলারের কাছে রায়বুনিয়া এলাকার সাবেকুন্নাহার (৪৫) নামে আরেক রোহিঙ্গা নারীর দুই পা উড়ে যায়।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশ-মায়ানমারের ২৭১ কি.মি. সীমান্তের থেকে ঘুমঘুমের তুমব্রু সীমান্ত এলাকা সবচেয়ে বিপজ্জনক। ওইসব সীমান্ত এলাকায় যারা থাকেন তাদের মধ্যে মাইন একটি বড় আতঙ্ক। ২০১৫ সালের ৭ জানুয়ারি মাসে নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তের ৪৯নং পিলারের নো-ম্যান্স ল্যান্ড থেকে ১২টি স্থলমাইন উদ্ধার করেছিল বিজিবি।