গাইবান্ধা প্রতিনিধিঃ দরিদ্র পরিবারের কন্যা জান্নাতী খাতুন। বয়স সবে মাত্র ১৪ বছর ছুঁই ছুঁই করছে, গায়ে গতরে একটু বড় হয়েছে তাই গ্রামের দরিদ্র পিতা তার মেয়ে বড় হয়েছে মনে করে ঠিক করল তার বিয়ে দিবে। যা ভাবা তাই কাজ শুরু হলো জান্নাতীর জন্য পাত্র খোজা এবং বিয়েও হলো সময় মত কিন্তু সংসার আর করা হলোনা ৮ম শ্রেণিতে পড়–য়া ছাত্রী জান্নাতীর। সাদুল্যাপুর উপজেলার ধাপেরহাট তিলকপাড়া তফেজান নেছা দাখিল মাদ্রাসার ছাত্রী। ওই উপজেলার ইদিলপুর ইউনিয়নের চকনদী গ্রামের জাইদুল ইসলাম তার কন্যা সে। অপ্রাপ্ত বয়স হলেও গত তিন মাস পূর্বে মাদ্রাসা ছাত্রী জান্নাতি খাতুনকে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ করেন তার অভিভাবক। বাল্য বিয়ের ঘটনাটি ঘটেছে: একই উপজেলার ধাপেরহাট ইউনিয়নের পালান পাড়া গ্রামের সাইফুল ইসলাম এর ছেলে রবিউল ইসলাম (১৬) এর সাথে। তৎকালীন সময়ে বাল্য বিয়ের খবর শুনে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও সংবাদকর্মীরা জাহদুলের বাড়িতে হাজির হয়ে জান্নাতির বিয়েটা ঠেকানোর চেষ্টা করেন এবং সেদিন ্ঐ বিয়েটা বন্ধ হয়। কিন্তু কন্যার বাবা জাহিদুল ইসলাম সবার চোখকে ফাঁকি দিয়ে রবিউল ইসলামের সাথে ঘটনার ৩ দিন পর বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ করেন। বিয়ের পর থেকে শ্বশুর বাড়িতে গিয়ে সংসার নামের জীবন যুদ্ধ শুরু করে জান্নাতি। এরই একপর্যায়ে জান্নাতি খাতুন বায়না ধরে লেখাপড়া করতে। কিন্তু দরিদ্র স্বামী রবিউল ইসলাম এতে রাজী নয়। তবুও জান্নাতি খাতুন সময় অসময়ে পড়াশুনা করার জন্য প্রস্তাব করে স্বামীকে। আর এই প্রস্তাবেই কাল হয়ে দাড়াল জান্নাতির। লেখাপড়া ইচ্ছা পোষনকে কেন্দ্র করে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে কলহ-দ্বন্দ্ব বাধতে ধাকে। একারণে জান্নাতির ওপর নেমে আসে অমানুষিক নির্যাতন। শেষে স্বামী রবিউল ইসলাম সিদ্ধান্ত নেয় জান্নাতিকে ডিভোর্স দিতে। এ সিদ্ধান্তকে অটল রেখে শুক্রবার সকালে কাজী ইব্রাহীম আলীকে ডেকে আনেন এবং তালাক নামায় সহি/স্বাক্ষর সস্পাদন করে অপ্রাপ্ত বয়সের কন্যা জান্নাতি খাতুন। অবশেষে বাল্য বিয়ের কারনে বিয়ের তিন মাস পরেই সংসার ভাঙল ৮ম শ্রেণির মাদ্রসা পড়–য়া ছাত্রী জান্নাতির। লেখা পড়ার বায়নাই হলো তার জীবনের মহাভুল! ডিভোর্স কন্যা জান্নাতির পিতা জাইদুল ইসলাম জানান, বিয়ের সময় নগদ ১০ হাজার টাকা ও অন্যান্য আসবাপত্র বর রবিউলকে দেওয়া হয়েছিল শুক্রবার তালাকের সময় সে টাকা ফেরৎ দিয়েছে ছেলে পক্ষ। ঐ এলাকার ইউপি সদস্য মোজাফ্ফর রহমান ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, অপ্রাপ্ত বয়সের ছেলে-মেয়েদেরকে বিয়ে দিলে এরকম ঘটনা ঘটাই স্বাভাবিক। তবুও গ্রামের লোকজন বাল্য বিয়ের ব্যাপারে উদাসীন।