২০১৭-১৮ অর্থবছরের বাজেটে শিক্ষা ও প্রযুক্তি খাতে সবচেয়ে বেশি বরাদ্দের প্রস্তাব করেছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। নতুন বাজেটে এ খাতে ৬৫ হাজার ৪৪৪ কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব করা হয়েছে, যা বাজেটে মোট বরাদ্দের ১৬ দশমিক ৪০ শতাংশ। তবে জিডিপির অনুপাতে তা সামান্যই বাড়ছে।
চলতি অর্থবছরে (২০১৬-১৭) শিক্ষা ও প্রযুক্তি খাতে ৫২ হাজার ৯১৪ কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব করা হয়েছিল; যা ছিল মোট বরাদ্দের ১৫ দশমিক ৫৩ শতাংশ। তবে সংশোধিত বাজেটে তা কমিয়ে ৫০ হাজার ২৯২ কোটি টাকা করা হয়।
শিক্ষা ও প্রযুক্তি খাতে এবারের বরাদ্দ জিডিপি’র ২ দশমিক ৯ শতাংশ; যা গতবছর ছিল ২ দশমিক ৭ শতাংশ ছিল।
৭ দশমিক ৪ শতাংশ প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা ধরে বৃহস্পতিবার সংসদে ২০১৭-১৮ অর্থবছরের জন্য ৪ লাখ ২৬৬ কোটি টাকার বাজেট প্রস্তাব করেন মুহিত; যা চলতি অর্থবছরের (২০১৬-১৭) মূল বাজেট ৩ লাখ ৪০ হাজার ৬০৫ কোটি টাকা থেকে ২৬ শতাংশ বেশি।
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অনুকূলে ২২ হাজার ২১ কোটি টাকা, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগকে ২৩ হাজার ১৪৭ কোটি টাকা, কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগকে ৫ হাজার ২৭১ কোটি টাকা, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়কে ১১ হাজার ৩৮ কোটি টাকা এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগকে ৩ হাজার ৯৭৪ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।
২০১৬-১৭ অর্থবছরের বাজেটে শিক্ষা ও প্রযুক্তি খাতে সর্বোচ্চ ১৫ দশমিক ৫৩ শতাংশ বরাদ্দ রাখা হয়েছিল। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের জন্য ২৬ হাজার ৮৪৮ কোটি, প্রাথমিক ও গণশিক্ষায় ২২ হাজার ১৬০ কোটি, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের জন্য ২ হাজার ৬৯ কোটি এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের জন্য ১ হাজার ৮৩৫ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছিল।
বাজেট বক্তৃতায় অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেন, ‘শিক্ষাকে দারিদ্র্য বিমোচন ও উন্নয়নের অন্যতম প্রধান কৌশল হিসেবে বিবেচনা করে এ খাতকে সরকার সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়ে আসছে। দিন বদলের সনদ ও রূপকল্প-২০২১ বাস্তবায়নের লক্ষ্যকে সামনে রেখে প্রণীত জাতীয় শিক্ষানীতি আমরা ধাপে ধাপে বাস্তবায়ন করছি। আমরা প্রথমেই চেষ্টা করেছি শিক্ষার সুযোগ সম্প্রসারণে। পরবর্তী অগ্রাধিকার হচ্ছে প্রশিক্ষিত শিক্ষক গড়ে তোলা।
এতদুদ্দেশ্যে শিক্ষকদের বেতন-ভাতা অনবরত উন্নীত হচ্ছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী ১২০টি বেসরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয় এবং ২৮৫টি বেসরকারি কলেজ সরকারিকরণের কার্যক্রম দ্রুত এগিয়ে চলছে। সার্বিক শিক্ষা খাতের মানোন্নয়নে অবকাঠামো নির্মাণ ও সংস্কার, এবং শিক্ষক প্রশিক্ষণসহ চলমান কার্যক্রম আমরা অব্যাহত রাখবো।
পাশাপাশি, মাধ্যমিক, কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষাসহ উচ্চ শিক্ষার প্রসার এবং উৎকর্ষতা সাধনে চলমান কার্যক্রমও অব্যাহত থাকবে। এ লক্ষ্যে একটি পাঁচ বছর মেয়াদি প্রকল্প গ্রহণ করা হচ্ছে। এতে সম্ভাব্য বিনিয়োগের পরিমাণ হবে প্রায় ১৮ দশমিক ২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। তবে এ কথা অনস্বীকার্য যে, শিক্ষার মানোন্নয়ন সময় সাপেক্ষ বিষয়।’