খুলনা মহানগরীর রায়ের মহল এলাকায় মোল্লা শাহাদাত হোসেন (৬৫) নামে এক মুক্তিযোদ্ধাকে গুলি করে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। বুধবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। এঘটনায় আরো ৫ জন গুলিবিদ্ধ হন।
নিহত শাহাদাত মোল্লা স্থানীয় মৃত গয়ের মোল্যার ছেলে। তিন ভাইয়ের মধ্যে তিনি বড়। মহানগরীর সোনাডাঙা থানা আওয়ামী লীগের মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক ছিলেন।
পুর্ব শত্রুতা ও আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করেই তাকে হত্যা করা হয়েছে বলে ধারণা করছেন খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের (কেএমপি) কমিশনার মো. হুমায়ূন কবীর।
কেএসপি কমিশনার জানান, এরইমধ্যেই শাহাদাত হত্যাকাণ্ডে জড়িত সন্দেহভাজনদের নাম পাওয়া গেছে। তাদেরকে দ্রুত গ্রেপ্তার ও হত্যা রহস্য উদঘাটনে পুলিশ সক্রিয় রয়েছে।
ঘটনার পর সিনিয়র সহকারী পুলিশ কমিশনার সুমন রঞ্জন সরকার সাংবাদিকদের জানান, শাহাদত হোসেন মোল্লাসহ কয়েকজনের সঙ্গে রায়েরমহল হামিদ নগরে অবস্থিত হাজী মহসিন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠে বসেছিলেন। বুধবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে অজ্ঞাত পরিচয় দুর্বৃত্তরা সেখানে হাজির হয় এবং তাদের ওপর গুলি চালায়। এতে গুলিবিদ্ধ হয়ে ঘটনাস্থলেই মুক্তিযোদ্ধা শাহাদাত হোসেন মোল্লা নিহত হন। তার সঙ্গে থাকা পাঁচ জন গুলিবিদ্ধ হন।
গুলিবিদ্ধরা হচ্ছেন- লিয়াকত আলী খান (৬৭) ও তার ছেলে মোস্তফা খান (৩৮), আজম তালুদকার (২৬), রুবেল (৩৫) ও বুলবুল (৩০)। আহতরা খুলনা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। মোস্তফা খানের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
পুলিশের ভাষ্য, নিহত শাহাদাত মোল্লার কাছে লাইসেন্স করা শটগান ও পিস্তল ছিল। ঘটনার সময় পিস্তলটি তার কোমরে ছিল এবং শটগানটি ছিল গাড়িতে। তিনি চেয়ারে বসা ছিলেন। দুর্বৃত্তরা তাকে পেছন দিক থেকে পিস্তল দিয়ে গুলি করে। এ সময় তার ভাগ্নে দ্রুত গাড়ি থেকে শটগান বের করে গুলি করে। একই সময় সঙ্গে থাকা লোকজন তার কোমর থেকে পিস্তল বের করে এলোপাথাড়ি গুলি করতে থাকে। গুলিতে ৫ জন আহত হয়। তবে আহতদের মধ্যে আজম তালুদকারকে (২৬) প্রতিপক্ষ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। তাকে পুলিশের হেফাজতে রাখা হয়েছে।
নিহত শাহাদাত এক সময় বিডিআর এ চাকরি করতেন বলে তিনি শুনেছেন। তিনি এলাকায় বেশ প্রভাবশালী ছিলেন। দুই বছর আগে তিনি দুটি ছেলেকে অস্ত্রসহ পুলিশে ধরিয়ে দেন। বর্তমানে তারা জামিনে রয়েছে। ফলে ঘটনার সঙ্গে তারাও জড়িত থাকতে পারে বলে সন্দেহ করা হচ্ছে।
নিহতের বোন শহর বানু জানান, গুলির শব্দে সবাই দৌড়াদৌড়ি শুরু করে। খালি গুলি ফুটতে থাকে। ওরা প্রথমে হাতে গুলি করে। তারপর পা দিয়ে চেপে ধরে বুকে গুলি করে।সূত্র-আরটিএনএন