গাইবান্ধা প্রতিনিধিঃ গাইবান্ধার সাদুল্যাপুর উপজেলার পালানপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের জমি সংক্রান্ত বিরোধকে কেন্দ্র করে বিদ্যালয়ে তালা ঝুলে দিয়েছে প্রতিপক্ষরা। গত সাত দিন যাবত তালা ঝুলানোর ফলে চলমান সাময়িক পরীক্ষার্থীরা স্কুল বারান্দায় বসে পরীক্ষা দিচ্ছে। এদিকে স্কুল প্রাঙ্গনে শিক্ষক/শিক্ষার্থীদের প্রবেশে প্রতিপক্ষরা হুমকি দিচ্ছেন বলে অভিযোগ উঠেছে । এ ঘটনায় চরম আতঙ্কে রয়েছে শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবক মহল। আর এই আতঙ্কের কারণে সোমবার পরীক্ষা চলাকালীন পর্যন্ত প্রায় অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থী প্রাণ ভয়ে পরীক্ষায় অনুপস্থিত রয়েছে বলে প্রধান শিক্ষক মাজেদা খাতুন জানিয়েছেন।
ঘটনার বিবরণে জানা গেছে, উপজেলার ধাপেরহাট ইউনিয়নের পালানপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি ১৯৯০ইং প্রতিষ্ঠাকালে বিদ্যালয়ের জমি দান করেন স্বর্গীয় প্রফুল্ল চন্দ্র সীল। এর পর থেকে এমদাদুল হক গংরা ওই জমির মালিকানা দাবী করিয়ে বিজ্ঞ আদালতে মামলা দায়ের করেন। সম্প্রতি মহামান্য সুপ্রিমকোটের আদেশে এমদাদুল হক গংরা মামলার রায় পান। আর এই রায়ের প্রেক্ষিতে গত ২ মে দুপুর আড়াইটার দিকে এমদাদুল হক গংরা জমির সীমানায় অবস্থিত বিদ্যালয়টিতে তালা ঝুলিয়ে দেন। শুধু তায় নয়, বিদ্যালয়ের রোপিত কয়েকটি ইউক্লিপটার্স গাছ কর্তন করে নিয়ে যান এমদাদুল হক গংরা। বেপরোয়া ভাবে গাছগুলো কাটার সময় গাছের ধাক্কায় স্কুল ভবন ও ল্যাট্রিনের ছাদে ফাটল ধরেছে বলে বিদালয়ের প্রধান শিক্ষক মাজেদা খাতুন জানান। এমনকি বাদী পক্ষ বার বার হুমকি প্রদর্শন করছেন বলে তিনি জানান।
ওই বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী রিপন দাস, কৃষ্ণচন্দ্র ও পিংকিরানী এ প্রতিবেদককে বলেন, টিউবয়েল রুমেও তালা লাগানোর কারণে আমরা পানি খেতে পারছিনা। প্রচন্ড গরমে পিপাসায় বাধ্য হয়ে বাড়ি থেকে পানি এনে খেতে হচ্ছে। অভিভাবক হাসেন আলী ও প্রকাশ চন্দ্র বলেন, ওই ঘটনার কারণে নানাবিধ ঝুকি মনে হওয়ায় আমাদের সন্তানদের লেখা-পড়া নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছি।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মাজেদা খাতুন জানান, বিদ্যালয়টিতে ১৮২ জন ছাত্র/ছাত্রী অধ্যয়নরত। প্রথম সাময়িকী পরীক্ষা চলাকালীন সময়ে প্রতিষ্ঠানে তালা ঝুলিয়ে দেয়ায় প্রায় অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থী ভয়ে পরীক্ষা দিতে আসেনি। তবে এবিষয়ে তালা খুলে দেয়ার দাবী জানিয়েছন বিদ্যালয়ের সভাপতি তোফাজ্জল হোসেন।
সাদুল্যাপুর উপজেলা শিক্ষা অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) আবুল হোসেন জানান, এ বিষয়ে প্রধান শিক্ষক মাজেদা খাতুন লিখিত অভিযোগ দিয়েছে। শিক্ষার্থীদের যাতে লেখাপড়ার ব্যাঘাত না হয় সেজন্য দ্রুত সমাধা করা হবে।
ধাপেরহাট ইউপি চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম নওশা মন্ডল বলেন, যেহেতু এমদাদুল হক গংরা জমির প্রকৃত মালিক হিসেবে রায় পেয়েছে সেহেতু বিদ্যালয়ে তালা লাগাতেই পারে।
সাদুল্যাপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) রহিমা খাতুন জানান, এবিষয়ে ডিসি স্যার সহ পরিদর্শনকালে ওই বিদ্যালয়ের তালা খুলে দেয়ার জন্য বলা হয়েছে।