এটিএম আফছার আলী, সুন্দরগঞ্জ (গাইবান্ধা) প্রতিনিধিঃ সুন্দরগঞ্জ উপজেলার সর্বত্রই দিনমজুর সংকটে ক্ষেতের পাকা ধান নিয়ে বিপাকে পড়েছে কৃষক। এক দিকে বৈশাখী ঝড় হাওয়া এবং অবিরাম বর্ষণ অপর দিকে ক্ষেতের ইরি-বোরো পাকা ধান যেন মাথায় বাঁজ ভেঙ্গে দিয়েছে কৃষক কিষানীর।
চলতি ইরি-বোরো মৌসুমের ব্রি-২৮ ধান ক্ষেত সম্পন্ন রুপে পেকে গেছে। ধান কেটে ঘরে তোলা নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়েছে কৃষক। কিন্তু দিনমজুর সংকটের কারণে পাকা ধান ক্ষেত থেকে কেটে আনতে পারছে না। নি¤œ অয়ের এবং দরিদ্র সীমার নিচে বসবাসরত শ্রমিকরা এখন গ্রাম গঞ্জে দিন মজুরের কাজ করছে না। তারা এখন শহর মুখি হয়ে পড়েছে। মৌসুম ভিত্তিক কাজের চেয়ে শহরে গিয়ে প্রত্যহ রিক্সা ভ্যান চালিয়ে এবং রাজ মিস্ত্রিসহ বিভিন্ন নির্মাণ কাজের লেবারি করে বেশি পয়সা রোজগার করছে তারা। এ কারণে গ্রাম গঞ্জে তীব্র দিনমজুর সংকট দেখা দিয়েছে। বিশেষ করে উচ্চ বিত্ত শ্রেণীর কৃষকরা মহাবিপাকে পড়েছে। অপর দিকে মধ্য এবং নি¤œবিত্ত শ্রেণির কৃষকরা স্ত্রী,পুত্র পরিজন নিয়ে ধান কাটা মাড়াইয়ের কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়েছে। দিনমজুরির ভিত্তিতে শ্রমিকরা কাজ করছে না। চুক্তি ভিত্তিক ছাড়া ধান কাটা মাড়াইয়ের কাজ করছে না কিছু সংখ্যক দিনমজুর। বর্তমানে জন প্রতি মজুরি দিতে হচ্ছে ৩৫০ হতে ৪৫০ টাকা। এছাড়া ১ বিঘা জমির ধান চুক্তি ভিত্তিক কাটতে দিতে হচ্ছে ৩ হাজার হতে ৪ হাজার টাকা। এতে করে দেখা গেছে চারা রোপন থেকে শুরু করে ধান ঘরে তোলা পর্যন্ত বিঘা প্রতি খরচ হচ্ছে ৮ হাজার হতে ৯ হাজার টাকা। শান্তিরাম ইউনিয়নের কৃষক তারা মিয়া জানান, কাল বৈশাখী ঝড়ে এক দিকে ফসলের অনেক ক্ষতি হয়েছে। অপর দিকে দিন মজুর না পাওয়ার কারণে যথা সময়ে ধান কেটে ঘরে তোলা সম্ভব হচ্ছে না। এতে করে ব্রি-২৮ ধানের ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে। বেলকা ইউনিয়নের দিন মজুর বাদশা মিয়া জানান, সারা বছর গ্রামে কাজ হয় না। যার কারণে জীবিকার জন্য শহরে যেতে হয়। অল্প কয়েক দিনের জন্য গ্রামে কাজ করে কি হবে। এর চেয়ে শহরে রিক্সা চালালে অনেক টাকা বেশি রোজগার করা যায়। উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ রাশেদুল ইসলাম জানান, এখন দিনমজুর নেই বললেই চলে। যে ২ হতে ১ জন রয়েছে। তারাও কৃষকের জমি বর্গা নিয়ে চাষাবাদ করছে। সব মিলে দিনমজুরের সংকটে সুন্দরগঞ্জের কৃষকরা।