গাইবান্ধা প্রতিনিধিঃ গাইবান্ধার সাঘাটা উপজেলার বীর মুক্তিযোদ্ধা আলতাফ হোসেন। অসহায় ভূমিহীন মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে ২০০৩ সালে স্ত্রী রোকেয়া বেগম ও মুক্তিযোদ্ধা আলতাফ হোসেন এর নামে ভরতখালী ইউনিয়নের মান্দুরা গ্রামের বাগমারা বিলে এক একর জমি সরকারের পক্ষ থেকে রেজিষ্ট্রি কবলা করে দেয়া হয়। সেই থেকে ঐ জমিতে চাষাবাদ করে ভোগদখল করে আসছিল। কিন্তু গত কিছুদিন আগে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মুক্তিযোদ্ধা সহ ভূমিহীন ও ব্যক্তি মালিকানা জমিতে বাগমারা মৎস্য প্রকল্প দেখিয়ে আবাদি জমিতে মাটি কাটতে শুরু করে। এতে প্রকৃত জমির মালিকেরা বাঁধা দিলেও ইউপি চেয়ারম্যান ও তার অনুসারীরা বিষয়টি তোয়াক্কা না করে মাটিকাটা মেশিন দিয়ে আবাদি জমি থেকে মাটি কাটতে শুরু করে। অসহায় ভুক্তভোগীরা নিরুপায় হয়ে বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ দায়ের করেও কোন প্রতিকার পাচ্ছেন না।
সাঘাটার ভরখালী ইউনিয়নের বাগমারা বিলের ৩ একর ২৫ শতাংশ জমির মধ্যে মুক্তিযোদ্ধা আলতাফ হোসেন ও তার স্ত্রীর নামে এক একর, কুষক হামিদুল হক এর ৩৬ শতাংশসহ আরো বেশ কয়েকজন ভূমিহীনের দলিলকৃত জমি রয়েছে। জমিতে তারা ইরি চাষাবাদও করে আসছে। কিন্তু ভরতখালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শামসুল আজাদ শিতল ও ইউপি সদস্য রুবেল মিয়া কৌশলে উপজেলা ভূমি অফিস থেকে ক্লিলিয়ারেন্স নিয়ে ঐ বিলে সম্পূর্ণ জমির উপর মৎস্য চাষ প্রকল্প পাশ করে খনন শুরু করে। এতে জমির মালিকেরা বাঁধা দিলে চেয়ারম্যান, মেম্বর তাদের সাঙ্গ-পাঙ্গদের হুমকীতে জমির মালিকদের কোন কথায় শুনতে রাজি না তারা।
এলাকাবাসীরা জানান ভুমিহীন মুক্তিযোদ্ধা, তার স্ত্রী ও স্থানীয় জমির মালিক দীর্ঘদিন ধরে নিজেদের নামে কবলাকৃত জমি ভোগদখল করে আসলেও চেয়ারম্যান অবৈধভাবে প্রকল্প দেখিয়ে আবাদী জমিতে মাটি কাটতে শুরু করেছে। এবিষয়ে বাঁধা ও অভিযোগ করলেও সে কোন তোয়াক্কা করছেন না এবং জীবন নাশের হুমকি দিয়ে যাচ্ছে।
ভরতখালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শামসুল আজাদ শীতল জানান এই বিলটি খাস জমি হিসেবে ভুমি অফিসে কোন আপত্তি নেই মর্মে মৎস্য বিভাগ প্রকল্প দিয়েছে। এখানে কারও জমি থাকলে সেটা দেখার দায়িত্ব তাদের। এজন্য কোন অভিযোগ শুণতে তিনি রাজি নন বলে পুরো বিষয়টি এড়িয়ে যান।
সাঘাটা উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা ফজলে ইবনে কাওছার আলী জানান কিভাবে ব্যক্তি মালিকানার আবাদী জমি মৎস্য চাষের প্রকল্পের আওতায় নিয়ে আসা হল এবিষয়ে মৎস্য কর্মকর্তাও দায় নিতে রাজি নন তিনি। উপজেলা নির্বাহী অফিসার উজ্জ্বল কুমার ঘোষ, অভিযোগ প্রাপ্তির কথা স্বীকার করে জানান, বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়াজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
তবে, প্রকৃত জমির মালিকেরা জমি ফিরে পাবেন এবং প্রভাব খাটিয়ে আইনের তোয়াক্কা আবাদী জমি খনন করা থেকে বিরত থাকবেন এমনটাই প্রত্যাশা ভুক্তভোগীদের।