গাইবান্ধা প্রতিনিধি : গাইবান্ধার সাদুল্যাপুের গ্রেফতারি পরোয়ানার এক আসামীকে ধরতে গিয়ে তাকে না পেয়ে তার শিশু সন্তানকে বেধরক মারধর করার অভিযোগ পাওয়া গেছে পুলিশের এক এএসআইয়ের বিরুদ্ধে। আহত আহনাফ শাহরিয়ার আলিফ বর্তমানে সাদুল্যাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছে। সে সাদুল্যাপুর মডেল পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্র।
স্থানীয়রা জানান,উপজেলার দামোদরপুর ইউনিয়নের কিশামত খেজুর গ্রামের নজরুল ইসলামের সাথে প্রতিবেশি সোলাইমানের দীর্ঘদিন ধরে জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধ চলে আসছিল। একপর্যায়ে নজরুল ইসলামসহ চারজনকে আসামী করে সোলাইমান আদালতে মামলা দায়ের করেন। সেই মামলায় আদালত আসামীদের নামে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে।
গত ১৯ এপ্রিল মধ্যরাতে সাদুল্যাপুর থানার এসআই মাহাবুব আলমের নেতৃত্বে একদল পুলিশ ওই মামলায় সাজু মিয়া নামের এক আসামীকে ধরতে তার বাড়িতে যায়। তারা সাজু মিয়াকে না পেয়ে তার স্ত্রী ও ছেলে আলিফকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে মারধর শুরু করে। এতে গুরুতর আহত হয় আলিফ। পরে তাকে সাদুল্যাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। এরপর বিষয়টি স্থানীয় সাংবাদিকদের নজরে আসে।
আলিফের মা আশা বেগম কান্নাজড়িত কন্ঠে বলেন, গত বুধবার গভীর রাতে একদল পুলিশ আমার বাড়িতে আসে। তারা আমার স্বামীকে না পেয়ে আমাকে গালিগালাজ করে। একপর্যায়ে আমার ছেলে আলিফকে এসআই মাহাবুব আলমের নির্দেশে এএসআই আরিফ বেধড়ক মারপিট করে গুরুত্বর আহত করে। পরে এই ঘটনা কাউকে না জানাতে নানা ধরণের ভয়ভীতি ও হুমকি দিয়ে চলে যায় তারা। এখন এএসআই আরিফ হাসপাতাল ছেড়ে অন্যত্র কোন আতœীয়ের বাড়ীতে চলে যাবার হুমকিও দিচ্ছে। কথা না শুনলে আমার স্বামী ও ছেলেকে জেলে পাঠাবে। ফলে আমাদের পুলিশি আতঙ্কে দিন কাটছে।
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আলিফ জানায়, এএসআই আরিফ তার বুকে-পিঠে ও মাথায় আঘাত করেছে। আমি এখন স্কুলে যাইতে পারছিনা।
সাদুল্যাপুর পাইলট মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. এনশাদ আলী বলেন, আলিফ পুলিশের মারধরে আহত হয়। পরে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।সেখানেও পুলিশ তাদের চিকিৎসায় বাধা দিচ্ছে।এমনকি হাসপাতাল ছাড়তে হুমকি দিচ্ছে। সাদুল্যাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফরহাদ ইমরুল কায়েস ছুটিতে থাকায় কথা হয় ওই অভিযানে নেতৃত্বে থাকা উপ-পরিদর্শক মাহাবুব আলমের সাথে। তিনি বলেন, ওই বাড়িতে অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে ঠিক। তবে সেখানে আলিফকে মারধরের ঘটনা সঠিক নয়। এ বিষয়ে অভিযুক্ত এএসআই আরিফ কথা বলতে রাজি হননি।
গাইবান্ধার পুলিশ সুপার মোঃ মাশরুকুর রহমান খালেদ মুঠোফোনে বলেন,বিষয়টি আমার জানা নেই। এখনই সার্কেল এএসপিকে তদন্তপুর্বক প্রতিবেদন দাখিল করতে বলছি।প্রতিবেদন পেলেই এএসআই আরিফসহ অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।