এটিএম আফছার আলী, সুন্দরগঞ্জ (গাইবান্ধা) প্রতিনিধিঃ এক সপ্তাহ ধরে সুন্দরগঞ্জ উপজেলার উপর দিয়ে বয়ে যাওয়া কাল বৈশাখী ঝড়ো হাওয়াসহ অবিরাম ভারি বর্ষণে নিচু এলাকার ইরি বোরো আধা-পাকা ধান নিয়ে চরম বিপাকে পড়েছে কৃষকরা। ইতিমধ্যে অনেক আধা পাকা ধান ক্ষেত পানির নিচে ডুবে গেছে। মাথায় হাত দিয়ে বসেছে কৃষক কুল।
ঋতু পরিবর্তনের কারণে অসময়ে অবিরাম ভারি বর্ষণ চলতি মৌসুমে ইরি বোরোসহ নানাবিধ ফসলের ব্যাপক ক্ষতির সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। এক সপ্তাহের বর্ষণে উপজেলার নদী-নালা, খাল-বিল, পুকুর-ডোবা, জলাশয়সহ নিচু এলাকার আধা পাকা ইরি বোরো ধান ক্ষেত সম্পূর্ণ ও আংশিকভাবে ডুবে গেছে। প্রত্যহ বর্ষণ হওয়ার কারণে ক্ষেতের ধান কেটে উঠানে নিয়ে আসা সম্ভাব হচ্ছে না। অনেক ক্ষেতের ধান ২ হতে ৩ দিন ধরে পানি নিচে ডুবে থাকায় নষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। অপরদিকে চরাঞ্চলে পিঁয়াজ, রসুন, করলা, পটল, বেগুন, মরিচ ক্ষেত বিনষ্ট হতে চলছে। বিশেষ করে ইরি বোরো ধান নিয়ে মাথায় হাত দিয়ে বসেছে কৃষকরা। শান্তিরাম ইউনিয়নের কৃষক আশেক আলী জানান-আমি ৫ বিঘা জমিতে ব্রি-২৮ ধান রোপন করেছি। ইতিমধ্যে প্রায় সম্পূর্ণ ধান পেঁকে গেছে। আমার জমি নিচু এলাকায় হওয়ায় ২ বিঘা জমির ধান সম্পূর্ণরূপে এবং বাকি ৩ বিঘা জমির ধানের গলায়-গলায় পানি জমে গেছে। এক দিকে দিনমজুর সংকট অন্যদিকে প্রতিদিন বৃষ্টি হওয়ার কারণে ধান কেটে ঘরে আনা সম্ভব হচ্ছে না। আমি আশঙ্কা করছি চারা রোপন থেকে শুরু করে ধান ঘরে তোলা পর্যন্ত যে ব্যয় হয়েছে, তাতে করে লাভ তো দূরের কথা বরং মোটা অংকের লোকসান গুনতে হবে। কাশিমবাজার চরের পিঁয়াজ চাষি মঞ্জু মিয়া জানান- আমার ২ বিঘা জমির পিঁয়াজ ক্ষেতে পানি জমে গেছে। ওই পিঁয়াজ তুলে বিক্রি করা সম্ভব হবে না। কারণ একদিকে রোদ নেই। অপরদিকে পানির নিচে ডুবে থাকা পিঁয়াজ মজুদ করে ঘরে রেখে বাজারজাত করা সম্ভব নয়। এ কারণে আমাকে কমপক্ষে ২০ হাজার টাকা লোকসান গুনতে হবে। উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ রাশেদুল ইসলাম জানান-এসময়ে বৃষ্টি হলে ইরি বোরো ফসলের কিছুটা ক্ষতির সম্ভাবনা রয়েছে। এসময়ের ক্ষতি কৃষকদের জন্য অত্যন্ত কষ্ট কর।