বেঙ্গালুরুতে জমে গিয়েছে টেস্ট। তৃতীয় দিনের শেষে ভারত এগিয়ে ১২৬ রানে। হাতে এখনও ৬ উইকেট। সারা দিনের খেলায় কী ঘটল? তুলে দেওয়া হচ্ছে গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা—
সুপারম্যান স্মিথ: রবিবারও তিনি ছিলেন আকর্ষণের কেন্দ্রে। কিন্তু অন্য কারণে। ভারত অধিনায়ক বিরাট কোহালির সঙ্গে স্লেজিং বিতর্কে জড়িয়ে গিয়েছিলেন স্টিভ স্মিথ। ভারতীয় পেসার ইশান্ত শর্মাও এসে মুখ ভেংচে যান। স্মিথও পাল্টা চেঁচামেচি করলেন। কিন্তু সোমবার অস্ট্রেলীয় অধিনায়ক শিরোনামে উঠে এলেন সুপারম্যানের মতো উড়ে গিয়ে ক্যাচ নেওয়ার জন্য। স্লিপে দাঁড়িয়েছিলেন স্মিথ। বাঁ হাতি স্পিনার ও’কিফের বলে কে এল রাহুলের খোঁচা ডান দিকে পাখির মতো উড়ে গিয়ে ধরে নেন স্মিথ। তখন দারুণ ব্যাট করছিলেন রাহুল। বিশ্বাসই করতে পারছিলেন না তিনি আউট। পুণেতে এ ভাবে উড়ে গিয়ে অবিশ্বাস্য ক্যাচ নিয়েছিলেন ঋদ্ধিমান সাহা।
ডিআরএস ও কোহালি: দু’পক্ষের মধ্যে মধুচন্দ্রিমা চলছে না একেবারেই। অধিনায়ক হিসেবে তো বটেই, ব্যাটসম্যান হিসেবেও ডিআরএস নিতে গিয়ে বার বার ভুল করছেন কোহালি। সোমবার তাঁর বিতর্কিত আউটেও ডিআরএস নিয়ে লাভ হল না। এই আউটটির ক্ষেত্রে তাঁর দিকে সহানুভূতির হাওয়া থাকলেও অধিনায়ক হিসেবে আরও ভাল ভাবে ডিআরএস প্রয়োগ করার দাবি উঠে গিয়েছে।
জাডেজা কম বল করলেন কি না: অধিনায়ক কোহালিকে নিয়ে আর একটা সমালোচনা শুরু হয়েছে। তিনি রবীন্দ্র জা়ডেজাকে কম বল করালেন? অনেক বিশেষজ্ঞেরই মত সে রকম। এমনকী, কোহালির প্রাক্তন টিম ডিরেক্টর রবি শাস্ত্রীও এই মত মেনে নিলেন একটি চ্যানেলে। ৬৩ রানে ৬ উইকেট নিলেন জাডেজা। তবে কোহালি বোধ হয় সহজাত প্রবণতায় দেখেছিলেন ব্যাপারটা। অস্ট্রেলিয়া দলে বাঁ হাতির সংখ্যা বেশি। তাই সহজাত প্রবণতা হল, অফস্পিনার অশ্বিনকে দিয়ে বেশি বল করানো। জাডেজা যে ঘূর্ণি পিচে ভাল বল করেন, সেই তথ্য ছিল না মাথায়। তবে শুধুই বোলার হিসেবে সেরা নয়, বাউন্ডারি লাইনে শূন্যে লাফিয়ে দুর্দান্ত একটি ক্যাচও নিলেন জাডেজা। কার ক্যাচ? না, মিচেল স্টার্কের। পুণেতে যিনি দুই ইনিংসেই ব্যাট হাতে তফাত গড়ে দিয়েছিলেন।
এ কেমন পিচ: সকাল থেকেই অনেক বার দেখা গেল এমন অদ্ভুত দৃশ্য। পেসারের বল গড়িয়ে যাচ্ছে। আবার স্পিনারের বল লাফিয়ে ব্যাটসম্যানের বুকে আছড়ে পড়ছে। কয়েক বার তো নাথন লায়ন প্রায় বাউন্সারও দিয়ে ফেললেন। আবার পূজারা-রাহানেরা যখন খেললেন, দেখে মনে হচ্ছিল ব্যাটিং সহজ হয়ে গিয়েছে। চিন্নাস্বামীর পিচ-রহস্য নিয়ে দিনের শেষে সবচেয়ে বেশি আলোচনা। তবে কি পিচ সহজ হয়ে গেল? কারও কারও মত সে রকমই। তা হলে কত রানের ‘লিড’ নিরাপদ হবে ভারতের জন্য। কেউ নিশ্চিত করে বলতে পারছে না। অবিচ্ছেদ্য পঞ্চম উইকেটের পার্টনারশিপে যোগ হয়ে গিয়েছে ৯৩ রান। ভারত এগিয়ে ১২৬ রানে। যদি পূজারা-রাহানে আরও এগিয়ে দিতে পারেন এবং ২০০ রানের ‘লিড’ আদায় করে নিতে ভারত, টেস্ট জেতার সুযোগ থাকবে। আবার পাল্টা মত হচ্ছে, পিচ যদি সহজ হয়ে যায় তা হলে ২০০ রান কি যথেষ্ট হবে? আর একটা মনে রাখার মতো তথ্য হচ্ছে, এই অস্ট্রেলিয়া দলের ব্যাটিংকে একটু চাপ দিলেই কিন্তু ভেঙে পড়তে পারে। শ্রীলঙ্কায় রঙ্গনা হেরাথ-রা যেটা করেছিলেন।
উত্তাপ চলছেই: আগের দিনের ইশান্ত শর্মার মতো কেউ মুখ ভেংচে দেননি। তবে সোমবারেও দু’দলের মধ্যে উত্তপ্ত সম্পর্ক অব্যাহত থাকল। কে এল রাহুল এক বার সাইটস্ক্রিনে অসুবিধে হচ্ছে বলে শেষ মুহূর্তে সরে গেলেন। বল করতে আসছিলেন নাথন লায়ন। তিনি থামলেন না। বল করে দিলেন এবং উইকেটও ভেঙে দিলেন। আম্পায়ার ‘ডেড বল’ ইঙ্গিত করার পরেও মানতে চাননি স্টিভ স্মিথ। তিনি হাত নেড়ে নেড়ে অসন্তোষ প্রকাশ করতে থাকেন।