গাইবান্ধার পলাশবাড়ী উপজেলার কিশোরগাড়ী ইউপি’র কাশিয়াবাড়ী এলাকার শহীদ পরিবারের সদস্যবৃন্দের আহ্বানে ১৮ মার্চ ২০১৭ইং বিকেলে কাশিয়াবাড়ী হাইস্কুল এন্ড কলেজ মাঠে সুধী সমাবেশ ও সাংবাদিক সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
কিশোরগাড়ী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সভাপতি মাহবুবর রহমানের সভাপতিত্বে সমাবেশে শহীদ পরিবারের সদস্য বাবু মন্ডল, প্রদীপ চন্দ্র শীল ও সাঞ্জু সরকার জানান ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময়ে ৭১-এর ১২ই জুন শুক্রবার প্রকাশ্য দিবালোকে ঘোড়াঘাট নুরজাহানপুরের (বিহারী) হানিফ উদ্দিন ও রমজান আলী খাঁন একদল পাক-হানাদার বাহিনী সাথে নিয়ে কাশিয়াবাড়ী, পশ্চিম রামচন্দ্রপুর, চকবালা, হাসানখোর, সগুনা, জাইতর, কিশোরগাড়ী, জাফর, মুংলিশপুর গ্রাম গুলি থেকে শান্তিরক্ষার নামে প্রায় ২’শতাধিক নারী-পুরুষকে রামচন্দ্রপুরে একত্রিত করে গর্দান কেটে, বেয়নেট খুঁচিয়ে এবং গুলি করে নির্মম, নৃসংশভাবে হত্যাযজ্ঞ চালায়। সেই সাথে হায়েনারদল অবলা, সরলা মা-বোনদের উপর চালায় পাশবিক নির্যাতন। এদের মধ্যে থেকে চকবালা গ্রামের সাগের আলী, আমির হোসেন, নয়া মিয়া, সগুনা গ্রামের আনিছুর রহমান, পশ্চিম রামচন্দ্রপুরের গোপিরঞ্জন সরকার ও কাশিয়াবাড়ী গ্রামের মাজেম আলী সৌভাগ্যক্রমে বেঁচে যায়। স্বাধীনতার পর কয়েকটি সরকার পরিবর্তন হলেও ওই সকল শহীদ পরিবার এবং নির্যাতিত পরিবারদের ভাগ্য উন্নয়নে কেউ এগিয়ে আসেনি। বর্তমান স্বাধীনতার স্বপক্ষের সরকার ক্ষমতায় এসে দেশের অনেক অবহেলিত মুক্তিযোদ্ধাদের খোঁজ-খবর করেছেন। দূর্ভাগ্যেজনক হলেও সত্য স্বাধীনতার ৪৭ বছরে এখানকার শহীদ পরিবার গুলো মুক্তিযোদ্ধার তালিকায় স্থান হয়নি। তাই তারা বর্তমান সরকারের মাননীয় প্রধান মন্ত্রী মহোদয়, সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী এবং জেলা উপজেলা পর্যায়ের দায়িত্বশীল কর্মকর্তাদের হস্তক্ষেপ কামনা করেন। সমাবেশে শহীদদের স্মৃতিচারণ করে প্রধান বক্তা হিসাবে বক্তব্য রাখেন সাবেক এমপি আলহাজ্ব তোফাজ্জল হোসেন সরকার, প্রধান অতিথি উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি আবু বকর প্রধান, বিশেষ অতিথি উপজেলা আওয়ামী লীগ সহ-সভাপতি একেএম মোকছেদ চৌধুরী বিদ্যুৎ, সাধারণ সম্পাদক উপাধ্যক্ষ শামিকুল ইসলাম লিপন, উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার আঃ রহমান সরকার। অন্যান্যদের মাঝে বক্তব্য রাখেন পলাশবাড়ী প্রেসক্লাব সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম, শহীদ পরিবারের সদস্য আঃ মজিদ মন্ডল, ও অনন্ত কুমার প্রমুখ। সমগ্র অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন কিশোরগাড়ী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি বাবু মৃণাল কান্তি।